নাটক অব্যাহত হালিশহর পুরসভায়
সাতদিনের সমাচার : হালিশহর পৌরসভায় নাটক অব্যহত ৷ মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অভিনয় দেখে খিল্লি উড়াচ্ছে পৌরনাগরিকরা৷ লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর বিমান চেপে দিল্লী গিয়ে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগদান করেন হালিশহর এবং কাঁচরাপাড়ার চেয়ারম্যান সহ একঝাঁক কাউন্সিলর৷ কিন্তু মাস গড়াতে না গড়াতেই ফের তারা ডিগবাজি মেরে ফিরলেন পুরাতন দল তৃণমূলে৷ আর এর পরই শুরু হয় পৌরবোর্ড দখলে রাখার দড়ি টানাটানি৷ উল্লেখ্য,হালিশহর পৌরসভায় মোট-২৩টি ওয়ার্ড৷১টি বিজেপির দখলে এবং একজন নির্দল কাউন্সিলর বাদে বাকি ওয়ার্ডগুলি ছিল তৃণমূলের ৷ গত কয়েকদিন আগে এই পৌরসভার আট জন কাউন্সিলর পৌরপ্রধান অংশুমান রায় -এর বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং ১৬ জুলাই পৌরসভার অধিকারিক(ইও)কে চিঠি দিয়ে দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন৷ তড়িঘড়ি ১৭ জুলাই পুরসভার সব কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে অনাস্থার দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হয়৷ এদিকে অনাস্থার প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে একটি পিটিশন জমা দেন বিরোধীদলের কাউন্সিলররা৷ শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি ২৩শে জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বতীকালীন স্থাগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছেন৷ অন্যদিকে এদিন দুপুরে পৌরসভায় একটি বৈঠক ডাকা হয়৷ আস্থা ভোটকে ঘিরে নিরাপত্তা চাদরে মুড়ে দেওয়া হয় পৌরসভা প্রাঙ্গণকে৷ এদিন দুপুরে একএক করে কাউন্সিলরা উপস্থিত হন পৌরসভায়৷ টানটান উত্তেজনার মধ্য শুরু হয় বৈঠক৷ যদিও বিরোধী দলের কাউন্সিলররা অংশগ্রহণ করেননি৷ মিনিট দশ চলা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পৌরপ্রধান অংশুমান রায় বলেন,আমরা আদালতের কোনও নির্দেশিকা পাইনি৷ পৌর আইন মেনে বৈঠক ডাকা হয়েছিল৷ ১৩জন কাউন্সিলার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন৷ সকলেই অনাস্থার বিপক্ষে সায় দিয়েছেন৷ সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে অংশুমানবাবু বলেন, প্রত্যেক কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে বৈঠকের সূচনা দেওয়া হয়েছিল৷ তার অভিযোগ,অনেক কাউন্সিলররা চিঠি প্রত্যাখ্যান করবেন, জানতে পেরে আমরা স্পিড পোষ্টে চিঠি পাঠাই৷ এমনকি সেই চিঠির কপি হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ তার প্রমাণও আছে আমাদের কাছে বলে দাবি করেন অংশুমানবাবু৷ তার কথায়, 'অনেকদিন ধরে পৌরসভার কাজকর্ম বন্ধ হয়ে পড়ে আছে৷ মানুষ পরিষেবা পাচ্ছে না৷আমরা চাই কাজকর্ম চালু থাকুক৷' অন্যদিকে বিজেপি নেতা তথা কাউন্সিলর দেবাশিস(রাজা) দত্ত বলেন,' বৈঠকের চিঠি আমরা পাইনি৷' তার প্রশ্ন, 'কে বোর্ড মিটিং ডেকেছে তৃণমূল না বিজেপি৷ চালাকি করে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে৷ যাতে আগামী ছয় মাসে আর কেউ অনাস্থা আনতে না পারে৷' এই মিটিংকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন,' দুর্নীতি গ্রস্ত চেয়ারম্যান এই সব করেছেন৷ আমরা আদালতের রায়কে অভিনন্দন জানাই৷ আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে৷ আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে চলবো৷'
No comments