তালাবন্ধ বাড়ির গ্যারেজ ঘরে বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ : চাঞ্চল্য নৈহাটির গরিফায়
নিজস্ব প্রতিনিধি : বাইরে থেকে সদর দরজায় তালা। পাশে গ্যারেজের লোহার গেটটিও তালা বন্ধ। ফাঁকা সেই বাড়ির মধ্যে থেকে মঙ্গলবার সকালে এক বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হল নৈহাটি থানার গরিফা বাঙাল পাড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম কৃষ্ণা দে (৭২)। জানা গেছে,বৃদ্ধার বড় জা ৮৪ বছরের অসুস্থ শোভা দে দোতলার ঘরেই থাকেন। নীচে নামার ক্ষমতা তার নেই। মৃতার স্বামী নারায়ন চন্দ্র দে ৮৫ বছর বৃদ্ধ। তিনি বন্ধ গৌরীপুর জুটমিলে চাকরি করতেন। নারায়ণ বাবুর সম্পর্কের ভাই হারাধন মিত্র এ নিয়ে বলেন, 'এদিন সকালে দাদাকে নিয়ে গরিফা চড়কতলায় ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে আমি পাশের পাড়ায় বাড়ি ফিরে যাই । দাদা আবার অন্য বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল। সকাল ৮-১৫ মিনিট নাগাদ খবর পেলাম দাদার বাড়িতে আগুন লেগেছে, পোড়া গন্ধ বেরোচ্ছে। দাদাকেও রাস্তায় একজন খবর দিয়েছিল। এসে দেখি গ্যারেজে বৌদি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে! হারাধনবাবু আরও বলেন,'গ্যারেজ তো তালা বন্ধ থাকে, কিন্তু তালা কে খুলল, কিভাবে খুলল বুঝলাম না। বৃদ্ধা কৃষ্ণাদেবী বড় কেরোসিন তেলের জার নিয়ে কিভাবে গায়ে আগুন দিল,তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন প্রতিবেশীরা। প্রত্যক্ষদর্শী সুষুমা চন্দ জানান, 'ওনাদের জানালার পাশেই রাস্তার কলে এদিন সকালে জল নিতে এসেছিলাম। তখন দেখি গ্যারেজ থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে,ওখানে একজন সাফাই কর্মী ড্রেন পরিষ্কার করছিল, উনি গ্যারেজের ফাঁকা অংশ দিয়ে দেখেন বৃদ্ধা আগুনে জ্বলছে! নৈহাটি থানার আই সি শুভ্রজিৎ মজুমদার বলেন,'এটি আত্মহত্যার ঘটনা। উনি নিজে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, গ্যারেজের মধ্যে থেকে একটি কেরোসিন তেলের জার এবং একটি দেশলাইয়ের বাক্স উদ্ধার হয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, মৃতার মেয়ে শ্রাবনী আমেরিকায় থাকেন, কিছু দিন আগে তিনি এখানে এসেছিলেন,আবার দিন পনেরো আগে তিনি ফিরেও গিয়েছেন l মৃতার আত্মীয়-পরিজনদের কথায়, 'কৃষ্ণাদেবীর বড় জায়ের বড় ছেলে সুবীর পরিবার নিয়ে কলকাতায় থাকেন, ছোট ছেলে রঞ্জন স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে এই বাড়িতে থাকেন, এদিন সকাল ৭-৩০ নাগাদ রঞ্জন এবং তার স্ত্রী অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন তারপরেই এই ঘটনা।' সম্পত্তি গত বিবাদের জেরে ঘটনা ঘটল কিনা,তা নিয়েও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
No comments