সাংবাদিক বৈঠকে চ্যালেঞ্জ জানালেন হালিশহরের পুরপ্রশাসক-------------------------------------*একইঞ্চি অবৈধ নির্মাণ প্রমান করতে পারলে দাঁড়িয়ে থেকে সব গুঁড়িয়ে দেব*
সোনালী ব্যানার্জী : পদ লাভের পর থেকে পুর এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থে লাগাতার কাজ করেও ঠিক পুরভোটের প্রাক্কালে অভিযোগের তীরে বিদ্ধ হলেন হালিশহর পুরসভার তরুণতুর্কী পুরপ্রশাসক রাজু সাহানি l
রাজ্যের প্রথমসারির একটি দৈনিক সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রচারিত হওয়া গঙ্গাবক্ষে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত একটি সংবাদ এই অভিযোগের মূল উৎস বলে জানালেন খোদ রাজু'বাবু l সম্প্রতি নিজের দপ্তরে একটি সাংবাদিক বৈঠক শেষে সমাচার সাতদিন'কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "পুরভোটের মুখে দল তথা সমগ্র পুরবাসিন্দাদের সামনে আমায় পর্যুদস্ত করতেই এই চক্রান্ত ! যার মূলে রয়েছে তৃণমূল বিরোধী শক্তি, আসলে পুরসভায় আমার কাজে কোনওপ্রকার খামতি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে টানাহিঁচড়া করে একটি খবর তৈরী করে দেয়া হল, যাতে সহজেই আমাকে কালিমালিপ্ত করা যায় l"
জানা গেছে, হালিশহর খাসবাটি এলাকার গঙ্গাতীরবর্তী একটি অংশে পুরোনো এক কারখানার জমি প্রায় ২৫ বছর আগেই কিনে নেয় সাহানী পরিবার l পরবর্তীতে ওই পরিত্যক্ত কারখানার জমির আমূল সংস্কার করে তাকে সাধারণের ব্যবহারের জন্য 'রিসর্ট' হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন সাহানী'রা l বছর সাতেক যাবৎ সেখানেই পুরোদমে নির্মাণ এবং সংস্কারের কাজ চলছে l অভিযোগ, পুরপ্রশাসক নাকি ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে গঙ্গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন ! বিএলআরও দপ্তরে আজও এই জমি আজও জাহাজ কারখানা মালিকের নামেই রয়েছে !
এ ব্যাপারে রাজুবাবু আজ সাংবাদিকদের বলেন ,"আমার কাছে সমস্ত বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, আপনারা চাইলেই পাবেন, ২৫ বছর আগেই আমার বাবা এই জমিটি কিনেছিলেন কারখানা মালিকের কাছ থেকে, আর গঙ্গাবক্ষ দখল করে অবৈধ নির্মানের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ! আসলে কারখানার পুরানো বাউন্ডারি পাঁচিলের উপর নতুন করে নির্মাণ কাজ চলছে, যে কোনও সময়ে আপনারা এসে তা দেখে নিতে পারেন,আমার কাছে পুরনো দস্তাবেজ এবং ছবিও রয়েছে যেগুলো সত্যি প্রকাশে সাহায্য করবে l" তিনি আরও বলেন,"আমি চাইবো পুরসভার ইঞ্জিনারিং বিভাগ সহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষ টীম তৈরী হোক, যারা আমার নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ নিয়ে বিশদে তদন্ত করুক, আমি পুরপ্রশাসক হিসেবে কথা দিচ্ছি গঙ্গার একইঞ্চিও যদি আমার নির্মাণের মধ্যে পড়ে, আমি নিজে দাঁড়িয়ে তা গুঁড়িয়ে দেব l"
এদিকে স্থানীয় মানুষজন তথা যুব সম্প্রদায় এই অভিযোগ নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ, সকলেই বলছেন, গোটা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাজু'দা দাঁড়িয়ে থেকে যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তাতে আমরা সাধারণ মানুষ, ক্লাব সংগঠন ওর পাশে সব আছি, এত সহজে আমরা আমাদের প্রশাসকের বিরুদ্ধে কাদা ছুঁড়তে দেব না l
এ নিয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএম কর্মী জানালেন, "দলগত মতবিরোধ থাকলেও এটুকু বলতে পারি রাজু সাহানী সত্যি কাজের ছেলে, যে এলাকায় বুক চিতিয়ে পুকুরভরাট রুখে প্রোমোটার'রাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে, সে অবৈধভাবে গঙ্গার জমি দখল নিয়ে নিজের সম্পত্তি দ্বিগুন করবে একথা কোনোমতেই বিশ্বাসযোগ্য নয়,সর্ষের মধ্যেই কোথাও ভূত লুকিয়ে আছে কিনা সেটার তদন্ত করা উচিত l"
কথা প্রসঙ্গে রাজুবাবু বারংবার বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও নির্দিষ্ট করে কোনও দলের নাম উল্লেখ করেননি ! স্থানীয় বিজেপি'র কোনও সাংগঠনিক নেতা কর্মীকে পাওয়া যায়নি, যিনি এ ব্যাপারে কথা বলবেন l
তবে শ্রী সাহানী'র কথায় , "আসলে খবরটা তৈরী করা, মুখরোচক করতেই 'জাহাজচুরি'র তকমা দেয়া হয়েছে, আমি ব্যক্তিগত স্তরে থানায় অভিযোগ জানাবো, প্রয়োজনে মানহানির মামলা পর্যন্ত করবো, যারা অসত্য খবর প্রকাশ করে আমাকে পুরবাসীদের কাছে অসৎ এবং অযোগ্য প্রমান করতে চেষ্টা করছেন তাদের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ! সাধারণ মানুষ আমার এবং তৃণমূলের পাশে আছে, আশা করি ভোটবাক্সে এর প্রভাব পড়বে না !"
No comments