48 ঘন্টা ধর্মঘটের সমর্থনে সিপিএম এর রেল অবরোধ :সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে কাঁচরাপাড়ায় নিগৃহীত দুই সংবাদকর্মী
সুমন দে : বামেদের ডাকা দু'দিনের সাধারণ ধর্মঘটের প্রথম দিন অর্থাৎ ৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল থেকেই শহরতলীর বিভিন্ন স্টেশনে ধর্মঘটের সমর্থনে রেল অবরোধ শুরু করে সিপিএম l কাঁচরাপাড়া স্টেশনেও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় ট্রেন চলাচল l জানা গেছে, সিপিএম বনধের সমর্থনে মিছিল করার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় কিছু কর্মী তা আটকে দিলে শুরু হয় বচসা। এ সময় ছবি তুলতে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় এক পত্রিকার দুই সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় তৃণমূলীরা। সংবাদকর্মীদের যথেচ্ছভাবে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ঐ পত্রিকার সম্পাদক l তিনি বলেন, 'আসলে সাংবাদিক নিগ্রহ এখন বীজপুরের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দিন দুয়ে'ক আগেই বীজপুর বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় একটি সংবাদমাধ্যমকে বড় মুখ করে সাংবাদিক নিগ্রহের বিষয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তার ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা ঘটল। তবে কি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে কাঁচরাপাড়ার নেতা- কর্মীরা ? প্রশ্ন তোলেন তিনি ।
বীজপুর প্রেস ক্লাবও সাংবাদিক নিগ্রহ নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছে। তবে বেলার দিকে কাঁচরাপাড়া পুরসভার প্রধান তথা কাঁচরাপাড়া টাউন তৃণমূল সভাপতি সুদামা রায়, খোকন তালুকদার, মিন্টু সামন্ত, সুনীল রায় সহ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের সামনে সাংবাদিক নিগ্রহের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "এটা চরম অন্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস এই নীতিতে বিশ্বাসী নয়, অত্যুৎসাহে এটা যারা ঘটিয়েছেন দলের সামনে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে l" বীজপুর প্রেস ক্লাব সদস্য ও উপস্থিত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সামনেই অভিযুক্ত তৃনমূল কর্মীরা হাতজোড় করে বারংবার ক্ষমা চেয়ে নেন কৃতকর্মের জন্য l দলের হয়ে, কর্মীদের হয়েও সভাপতি এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করলে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাই জিআরপি বা বীজপুর এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি নেতৃত্বের অনুরোধে l
এদিকে ধর্মঘটের সমর্থনে আগেই বামেরা ঘোষণা করেছিল রেল অবরোধ করা হবে। সেই মতো অবরোধ হয়েছে শিয়ালদহ - লালগোলা মেন লাইনের কাঁচরাপাড়া-সহ একাধিক স্টেশনে। ফলে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও অনেকেই সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি।
এদিকে হাজিনগর এলাকায় চটকল, পেপারমিল-সহ সমস্ত শিল্পাঞ্চলে বনধ সর্বাত্মক বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতা রবীন্দ্রনাথ মুখার্জি।
নৈহাটিতেও অল্প বিস্তর অবরোধ চলেছে । ঘোষপাড়া রোডও অবরোধ করা হয়েছে অল্প সময়ের জন্য । তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, 48 ঘণ্টা 'বাংলা বনধ' জনজীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, গোটা বীজপুর এলাকায় দোকানপাট স্বাভাবিক নিয়মে খোলা থাকতে দেখা গেছে, স্কুল-কলেজ, সহ যান চলাচলও স্বাভাবিক ছিল l তবে সকাল সকাল বনধ কর্মসূচি পালন করার জন্য সিপিএম কর্মীরা তাদের লোকাল পার্টি অফিস থেকে মিছিল শুরু করে কাঁচরাপাড়া রেল স্টেশনে শেষ করে। ব্যাস ওই পর্যন্তই l সিপিএমের কাঁচরাপাড়া এরিয়া কমিটির অভিযোগ, রেলস্টেশনে জিআরপি পিকেটিং তুলে দিয়েছে জোর করে। এছাড়া সোদপুরে বেলঘরিয়া এবং বনগাঁ শাখায় বন্ধের মিশ্র প্রভাবের খবর মিলেছে l এ দিনের ডাকা বন্ধ কার্যত অসফল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
No comments