কাঁচরাপাড়া স্টেশনে অসহায় পঙ্গু শিশু : পাশে দাঁড়ালেন সংবাদ কর্মীরা
সাতদিনের সমাচার : মানুষ যেমন নির্মম হতে পারে আবার এই মানুষই হয় চরম হৃদয়বান - ফের প্রমান হয়ে গেল কাঁচরাপাড়া স্টেশনে ঘটে যাওয়া একটি হৃদয়স্পর্শী ঘটনায়, সোমবার রাত পৌনে এগারোটা, সরগরম কাঁচরাপাড়া স্টেশন, কেননা গত ৩ দিন ধরে একটি বছর দশকের পঙ্গু বালক কাঁচরাপাড়া স্টেশনের রিজার্ভেশন কাউন্টারের পাশে পড়ে আছে অসুস্থ অবস্থায়, অবশ্য জায়গাটা বহু বছর ধরেই চালচুলোহীন বা পরিবার পরিত্যক্ত অসহায় মানুষের বিশেষ রাত্রিবাসের জায়গা। অত রাতেও বালকটিকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন স্টেশনের কুলি থেকে অফিসফেরত কিছু যাত্রী। তাঁরাই ফোনে সাংবাদিক আর চাইল্ড হোমের সঙ্গে যোগযোগ করছিলেন ছেলেটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে। খবর মেলার পর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল ঘটনাটি, গায়ে জ্বর, দুর্বল এবং শীর্ণ বালকটি নিজের সামান্যই পরিচয় দিতে পারল। জানা গেল, বাড়ি ঝাড়খণ্ডের যশিডি (!)। নির্মম বাবা-মা ফেলে গেছিল রেল লাইনে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনমতে এসে জায়গা করে নিয়েছে কাঁচরাপাড়া স্টেশনের এক কোণে। স্থানীয় এক দোকান কর্মচারী তরুণ তাঁকে বাড়ি থেকে জমা-কাপড় আর মাঝেমাঝে খবর দিয়ে যাচ্ছিল। ভিক্ষাই সম্বল ছিল তার। যদিও আগের দিন স্টেশনে ঘুরে বেড়ানো কয়েকটি নেশাখোর ছেলে তার ভিক্ষা করে পাওয়া অর্থ কেড়ে নিয়ে যাওয়ায় কান্নাকাটিও করছিল অসহায় পঙ্গু ছেলেটি । এসবই চলছে কাঁচরাপাড়া স্টেশনে। অথচ জিআরপি বা অন্যকোনো রেলকর্মী কেউ ঘুনাক্ষরেই টের পাননি !!! বেসরকারি হাসপাতালে চেষ্টা করেও ঠাঁই না মেলায় দুই সাংবাদিক বহু চেষ্টার পর ছেলেটি'কে প্রায় মধ্যরাতে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করেন। কার্যত ভ্রূক্ষেপহীন কর্মরত উঁকিঝুঁকি মারা জিআরপি কর্মীকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, 'যাঁরা ছেলেটিকে নিয়ে গেল, তাঁরা কারা?' স্বভাবতই অকুস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা ও স্থানীয়রা প্রশ্ন তোলেন, আপনারা এতদিন ব্যবস্থা নেননি কেন? সদুত্তর দিতে না পারায় শেষ পর্যন্ত তখন তিনি কেটে পড়েন ওই জিআরপি কর্মী l তবে এ কথা সত্যি যে সবাই এখনো অমানবিক হয়ে যায় নি l
No comments