পুজো নিয়ে ধুন্ধুমার সিদ্ধেশ্বরী লেনে
সাতদিনের সমাচার : সিদ্ধেশ্বরী লেনের দুর্গাপুজো নিয়ে চাপা ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছিলই। গতকাল সন্ধ্যা থেকে এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক শুরু হল। কাদের দখলে পুজো হবে তাই নিয়েই চলছিল এলাকাবাসীদের মধ্যে রঙ দেখে দড়ি টানাটানি। এখন সবকিছুতেই গেরুয়া না সবুজ, তা দেখা মজ্জাগত হয়ে গেছে একশ্রেণির, বিশেষত রাজনৈতিক দলের কর্মীদের। প্রতিবেশীরা পরস্পর মেলমেশাও করে এখন ঐ রঙ দেখেই। আক্রোশ তো আছেই। একসময় যারা দখলদারি করেছে অর্থাৎ কুক্ষিগত করে রেখেছিল সিদ্ধেশ্বরী লেনের মত পাড়ার পুজোগুলোকে, এখন তারা ব্রাত্য।
এমনই একজন পুলক। বাম আমলে সিপিএম নেতা হারু ঘোষের সঙ্গী। এখন রঙ বদলে বিজেপি। তাঁর মাতব্বরি রুখতেই গতকাল বাইকবাহিনী নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় হাজির হয়েছিলেন বাম জমানার আরেক 'লড়াকু', বর্তমানে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের আশীর্বাদপুষ্ট রাজা সরকার। এই কিছুদিন আগেও তিনি বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত ছিলেন। এমনকি তৃণমূল থেকে বিধায়কের সাথে দিল্লী গিয়ে নাম লিখিয়ে সাময়িক বিজেপিও করেছেন। তখন কাঁচরাপাড়ার তৃণমূল নেতারা এই সম্মিলিত বিজেপিবাহিনীর ভয়ে কুঁকড়ে থাকতেন এলাকায়। দখল হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের সব কার্যালয়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের 'বডিগার্ড' নিয়ে চলতে হয়েছে। 'সে দিন গেছে' খুব তাড়াতাড়িই। যদিও এখনো 'বডিগার্ড' নিয়েই চলছেন তাঁরা। এদিকে খোদ বিধায়ক শুভ্রাংশু 'বডিগার্ড তুলে নেওয়ায়, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে অভিযোগ করছেন। পুজো নিয়ে তিনি অবশ্য এখনো সিদ্ধেশ্বরী লেনের অবস্থায় পরেননি এখনো। তাঁর আশীর্বাদপুষ্ট ১৬'র পল্লী'র পুজো এবার বাজেট বাড়িয়ে তাঁরই দখলে থাকা একসময়ের কংগ্রেস ভবন থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু বিজপুরের অন্যত্র যে বিজেপির হাল বদলাতে শুরু করেছে তা এলাকাবাসী ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছে। এলাকায় সঞ্জীব দাসের পর গতকাল পাল্টা ধাক্কা খেয়েছেন পুলক। আবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ থানার ঢিল ছোঁড়া দুরত্ব আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি'র কর্মী বিক্রম সরকার। দলের কাঁচরাপাড়া মণ্ডলের যুব মোর্চার সভাপতি অমিত মণ্ডল ওরফে হীরার অভিযোগ, থানা মোড়ের তৃণমূল কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে বিনা কারণে বিক্রম ও তাঁর সঙ্গীদের আক্রমণ করা হয়। বিক্রমকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে গতকাল পুলকের সাথে দেখা করতে সিদ্ধেশ্বরী লেনে যাওয়ার পর তৃণমূলের বাইক বাহিনী ঢোকে এবং ওখানকার পুজোকে কেন্দ্র করে কথাবার্তার মধ্যেই পুলককে তাঁর সামনেই মারধোর করে ও সোনার চেন টেনে ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন, দলের কাঁচরাপাড়া মণ্ডলের সভাপতি সমর দাস। তাঁর অভিযোগ, বিজপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও তাঁদের কোন কথায় কর্ণপাত করছে না। গতকাল থানা মোড়ে তৃণমূল কর্মীরা ভীড় করেছিল, সংঘর্ষ এড়াতে রাতে আর তাঁরা থানামুখো হতে চাননি। জেলা সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র কাঁচরাপাড়ায় এসে তৃণমূলের অত্যাচারের ব্যাপারে তাঁদের কি নির্দেশ দেন, সেদিকে তাকিয়ে বিজেপি কর্মীরা।
No comments