ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার : বাঁচলেন মরণাপন্ন অন্তঃসত্ত্বা
সাতদিন সমাচারঃ ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার করে মরণাপন্ন এক অন্তঃসত্ত্বারা জীবন ফিরিয়ে দিলেন বারাকপুর বিএন বোস মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ৷ জাফরপুর নন্দিবাড়িতে তাই আজ তারা ঈশ্বরতুল্য ৷ মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা কোনরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ, তারা রেফার করেই খালাস পেয়ে থাকেন এমন অভিযোগ এ রাজ্যে ভুরি ভুরি ৷ কিন্তু এই অভিযোগকে মিথ্যে করে দিয়ে মাত্র দিন কয়েক আগে ঠিক বিপরীত পথে হাঁটলেন সেই সরকারি ডাক্তার'রাই তাও আবার এক মহকুমা হাসপাতালে৷ ভোর চারটে নাগাদ তলপেটে যন্ত্রণা নিয়ে জাফরপুর থেকে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা হাসপাতালে ভর্তি হন ৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর,জরুরী বিভাগে তাঁর চিকিতসাও করেন ডাক্তারবাবুরা ৷ কিন্তু ক্রমে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালের দিকে তাঁকে ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয় ৷ সুপার সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন,জাফরপুরের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা মহিলা লেখাশ্রি নন্দীর ব্লাডপ্রেসার ছিল ৫০/৭০,তাঁর পালস পাওয়া যাচ্ছিল না৷ রোগীর ক্লিনিক্যাল টেষ্টের প্রয়োজন ছিল৷ অপরেশান সহ চার ইউনিট রক্তও জরুরি ছিল ৷ তড়িঘড়ি আমরা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রাজীব সরকার,সার্জেন অমিতাভ ভট্টাচার্য,আশিষ পাল এ্যনেথেসিয়ার সহ নার্সিং স্টাফদের নিয়ে একটি মেডিকেল টিম তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে অপারেশেনের সিদ্ধান্ত নিই ৷ এদিকে অপারেশন শুরুতেই দেখা যায় রোগীর ইউটেরাসে থাকা টিউমরটি ব্লাস্ট হয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে ৷ যা থেকে তিন লিটার রক্ত বের করা হয়৷ অপারেশন চলাকালিন রোগীর কার্ডিও সমস্যা লক্ষ করেন ডাক্তাররা৷ সুদীপ্তবাবু এ্যনেথেসিয়ার ডাক্তার আশিস পালের প্রশংসা করে বলেন,'খুব সুন্দরভাবে রোগীকে রিব্যক করিয়ে সঠিক জায়গায় নিয়ে আসেন৷ এরপর ঘন্টা দুয়েক পর্যবেক্ষণে থাকার পরে তাঁকে বেডে সিফ্ট করা হয়৷ তিনি আরও বলেন,এটা বড় সাফল্য যা টিম ওয়ার্কের জন্যই সম্ভব হয়েছে৷ তাছাড়া কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের মাতৃমৃত্যুকে বাঁচানো যে প্রচেষ্টা চলছে তার একটা নজির আমরা গড়তে পেরেছি৷ রোগীকে অন্যত্র পাঠালে বাঁচানো যেত না৷' অপারেশনের পর রোগীর বোন জয়শ্রী সরকার হাসপাতালের প্রশংসা করে বলেন,ভালো চিকিৎসা পেতে আমরা বেসরকারী হাসপাতাল ছুটে যাই৷ কিন্তু সরকারি হাসপাতালেও এত ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় আমাদের জানা ছিল না৷ দিদিকে সুস্থ ফেরত পেয়ে আমরা খুব খুশি৷
No comments