ব্রেকিং নিউজ

কাঁচরাপাড়ায় ভিন্ন স্বাদের পুজো : বারাকপুর প্রেসক্লাবের পুরস্কার জিতে নিল সৎকার সমিতি

সাতদিনের সমাচার : ডায়ে-বাঁয়ে বল কাটাতে কাটাতে ছুটে চলেছে এক যুবক। তার আধুনিকতা এবং অভিনব ভাবনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ খোদ বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। যদিও একসময়ের সঙ্গী এখন চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। বিধায়কের ক্ষোভও আছে তাঁর প্রতি। অভিযোগ, একসময়ের সঙ্গী রাজা সরকারের দাপটেই বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল খোদ বিধায়কের পাড়ার ভারতী সংঘের ঐতিহ্যশালী  পুজো। স্টেশনরোড থেকে ওয়ার্কশপ রোড দখলে নিয়ে প্রায় গোটা কুড়ি ছোট বড় গেট করেছে সৎকার সমিতি। স্বভাবতই ইচ্ছা থাকলেও ভারতী সংঘের প্রবেশপথে তিনটি গেট করার পরিকল্পনা ছেঁটে ফেলতে হয়েছে। শেষমেশ অবশ্য ঘটক রোডের  কালীপুজোটি নমো নমো করে হয়েছে পাড়ার লোকেদের চাহিদামতো। কেন এমন হলো? 
জানা গেছে, এবারও টেলার রোডের  নিশান ক্লাবের দুর্গাপুজো নমো নমো করে হয়েছে। এলাকায় দু-তিন বছর ধরে রাজনৈতিক ডামাডোল চলছে। সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না এলাকার ডাকাবুকো রাজনৈতিক কর্মী রাজা সরকার। কাঁচরাপাড়ায় রাজনৈতিক টালমাটাল  অবস্থা কেটে যাওয়ায় তারও একটি বড় ভূমিকা আছে। অতএব এখন 'ফুল ফর্ম'-এ রাজা। 
পুজো সবসময়ই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একটা অন্য পরিচয় এনে দেয়। সেই সুযোগ নিতেই রাজা এবার নিজের বাড়ির সামনের ক্লাব সৎকার সমিতিকে হাতিয়ার করেছেন। দুর্গাপুজো কাটতেই পরিকল্পনা। অবশেষে রূপ পেল কালীপুজোতে। রাজার পরিকল্পনাকে রূপ দিয়েছেন সল্টলেকের তাপস বসু। বাঁশ, বেত, পাটকাঠি, মিষ্টির প্যাকেট, খবরের কাগজ, পেট্রোলিয়াম কাপড় প্রভৃতি দিয়ে তাপসের উপস্থাপনার 'থিম'। ভাবনার নেপথ্য সময়োপযোগী। রাজা বলেছেন, এলাকার মানুষ নতুন কিছু চাইছিল কিন্তু পাচ্ছিল না। তাদের ভিন্নস্বাদ দিতেই সৎকার সমিতির এবারের উপস্থাপনা। শিল্পীর ভাবনা হল, হাত মানুষের শক্তির হাতিয়ার। কিন্তু সেই হাত খারাপ কাজে ব্যবহার হয় অথবা হাত বেঁধে রাখা হয়। সমাজের এমন অবস্থা। এর থেকে মুক্তি পেতে গেলে মেডিটেশন খুব জরুরী। সৎকার সমিতির মন্ডপে ঢোকার মুখে থাকা মুখটির ওপরও রাখা হয়েছে একটি নেট অর্থাৎ মানুষের মুখে আনা হচ্ছে বন্ধন। আবার মুখ এখন মুখোশ হয়ে গেছে। এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় সৎকার সমিতির উপস্থাপনায় দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে, এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মেডিটেশন-এর প্রয়োজন। সেই সুবাদেই ভাবা হয়েছে গৌতম বুদ্ধকে। সন্ধ্যা হতেই একরাশ ধোঁয়া, হালকা আলো আর চান্ট বাজিয়ে মন্ডপটিকে একটি নির্জন স্থান হিসাবে তুলে ধরার সুন্দর প্রয়াস নেওয়া হয়েছে যা মেডিটেশনের পক্ষে জরুরি। সৎকার সমিতির ভাবনা এলাকার মানুষকে কতটা অনুপ্রাণিত করতে পেরেছেন জানা যায়নি তবে উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। মন্ডপের উপযোগী মূর্তি গড়েছেন নৈহাটির বীরেন পাল। সাজসজ্জা গড়েছেন নৈহাটির 'ভোলাদা'। তাঁদের মূর্তি জিতে নিয়েছে ব্যারাকপুর প্রেসক্লাবের 'দীপান্বিতা সম্মান ২০১৯'। জানাগেছে আলোকসজ্জায় ছিলেন চন্দননগরের শিল্পীরা। এদিকে বৃষ্টির আশঙ্কাতে সকলেই ছিলেন আতঙ্কিত। প্রথম দিন এ কারণেই পন্ড হয়ে গেছে সংঘের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অবশ্য তাতে শাপে বর হয়েছে। প্রথম দিন উদ্বোধন করার কথা ছিল তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিকের। অনুষ্ঠান পন্ড হওয়ায় হঠাৎই যোগাযোগ হয়ে যায় তৃণমূল সাংসদ তথা জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর সাথে। তিনি উদ্বোধন করায় নিঃসন্দেহে এলাকায় একটি নতুন মাত্রা পেল কাঁচরাপাড়ার শ্যামা পূজা।

No comments