জেঠিয়া : রাতের অন্ধকারে পুকুর চুরি রুখে দিল বাসিন্দারা ------------------------------------------- অবৈধ কাজে নাম জড়ালে দলের কেউ ছাড় পাবে না : সুবোধ
সাতদিনের সমাচার : রাতের অন্ধকারে প্রাচীন এক ডোবা ভরাট করা নিয়ে উত্তেজনা তৈরী হল সোমবার মধ্য রাতে হালিশহর জেঠিয়া গ্রাম পঞ্চায়তের নান্না ডোবা কলোনি এলাকায়৷ জানা গেছে,জমি হাঙ্গররা ভ্যাটের অবর্জনা দিয়ে এলাকার এই সুপ্রাচীন ডোবা ভরাট করার চেষ্টা করে, সেইমত এদিন রাতের অন্ধকারে আবর্জনা বোঝাই দুটি ডাম্পার এসে ওই ডোবায় ময়লা ফেলে ভরাট করার চেষ্টা করে৷ সে সময় জেঠিয়া পঞ্চায়তের ৭৫ নম্বর পার্টের ডোবা কলোনির বাসিন্দারা এসে বাধা দেন৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একটি ডাম্পার চালক সোজা গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়৷ অন্য একটি ডাম্পারের চালককে আটকে রেখে দেয়া হয় জেঠিয়া পঞ্চায়তের ৭২নম্বর পার্টের পঞ্চায়ত সদস্য তির্থঙ্কর মুখার্জী এবং তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষ'কে ৷ খবর দেওয়া হয় বীজপুর থানাতেও ৷ পুলিশ এসে ওই ডাম্পার চালককে আটক করে বলে জানা গেছে ৷ স্থানীয় বাসিন্দা সুস্মিতা চৌধুরী বলেন, বেআইনিভাবে এই ডোবাটি ভারাটের চেষ্টা করা হচ্ছে, অথচ বৃষ্টির সময় এখানের হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যায় আর সেই জল এই ডোবা দিয়েই নিষ্কাশন হয়, শুধু তাই নয় জেঠিয়া অঞ্চলের যাবতীয় নিকাশি জল এই ডোবা হয়েই বড় নালায় চলে যায়, কিন্তু সংস্কারের অভাবে দিনে দিনে ময়লা জমে এটা এখন আর ডোবা মনে হয় না, অথচ এই ডোবা কিন্তু বহু প্রাচীন, ডোবার নাম থেকেই এলাকার নাম ডোবা কলোনি ৷' তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'এটা ভরাট করে দিলে এলাকার জল পাস করবে কথা দিয়ে ? বর্ষার সময় গোটা ডোবা কলোনি জলে ডুবে যাবে ! যদি কেউ এই জায়গা কিনেও থাকেন, তবুও পুকুর বোজানোর আইন আছে কি ? আর পুকুর বুজিয়ে ফ্ল্যাট করতে আমরা দেব না৷' তিনি আরও বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন প্রশাসনের রেকর্ডে এটা পুকুর বলেই উল্লেখ আছে ৷ স্থানীয় বিজয় চৌহানও একই অভিমত পোষণ করেন l স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষ বলেন,'চার পাঁচ বছর আগে মিন্টু পাল নামে একজন প্রোমোটার জায়গাটি অলোক ঘোষের কাছ থেকে কিনেছেন বলে শুনেছি৷ এলাকার সমস্ত জল এসে এই ডোবায় জমা হয় এবং ডোবা লাগোয়া নিকাশি নালা ধরে সোজা হাইওয়ের দিকে চলে যায় ৷ সোমবার রাতে বেআইনিভাবে ডোবাটি ভরাটের চেষ্টা করা হয়, স্থানীয়রা রুখে দাঁড়ালে একটি ডাম্পার পালিয়ে যায় এবং আরএকটি ডাম্পারকে আটকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ বিষয়টি নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে জানানো হয়েছে৷ তির্থঙ্কর মুখার্জী বলেন,'ছোটে থেকে দেখছি এটা পুকুর৷ এত বছর পর কিছু অসাধু ব্যক্তি রাত্রিবেলা ভরাট করার চেষ্টা চালিয়েছে৷ কিন্তু স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় তারা পিছু হটেছে আমরা মানুষের পাশে আছি, পুকুর ভরাট করে ফ্ল্যাট করা যাবে না৷ এদিকে জেঠিয়া পঞ্চায়ত প্রধান শিয়াঙ্কা ঘোষের কাছে এ বিষয় জানতে গেলে তিনি বলেন,'পরে যোগাযোগ করবেন, এখন আমি কিছু বলতে পারব না৷' তবে পঞ্চায়েত প্রধানের জনসংযোগ নিয়ে স্থানীয় মানুষের প্রচুর ক্ষোভ রয়েছে, অনেকেই বলছেন, বড় মাথা পিছনে না থাকলে পুকুরচুরির মতো কাজ করা যায় কি ?
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, তৃণমূল দলের জেলা সম্পাদক সুবোধ অধিকারী'র অনুমতি সাপেক্ষেই নাকি এই ডোবা ভরাট করা হচ্ছিল! এরপরই সমাচার সাতদিন সরাসরি সুবোধবাবুর সঙ্গে দেখা করলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, 'কোনও বেআইনি কাজের সঙ্গে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা আমার নাম জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে প্রথমেই থানাতে এফআইআর করুন আপনারা l আমি বীজপুর থানার প্রধানকেও একই কথা বলে রেখেছি, আমার দলের কোনও কর্মীও যদি অবৈধ কাজে জড়িয়ে আমায় বদনাম করতে চায়, তাকেও রেয়াত করা হবে না, নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে বলেছি, আগে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন, তারপর আমায় খবর দেবেন l'
No comments