সংগ্রাম বেঁচে থাকুক সকলের মধ্যে : শোকস্তব্ধ পরিবারকে কুর্নিশ আমজনতার
সাতদিনের সমাচার : মৃত্যুর পরও নজির রেখে গেল সংগ্রাম। ভাটপাড়ার বাসিন্দা পেশায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ৩১ বছর বয়সের তরতাজা যুবক সংগ্রাম ভট্টাচার্য কল্যাণী থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে ১৪ আগস্ট রাতে কল্যাণী বারাকপুর হাইওয়েতে বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন, মাথায় গুরুতর চোট লাগে। রাতেই তাকে প্রথমে জে এন এম হাসপাতাল এবং সেখান থেকে পরদিন ভোরে কলকাতার নামী একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তড়িঘড়ি মাথায় অস্ত্রপোচার হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রবিবার চিকিৎসকরা সংগ্রামের ব্রেন ডেথ বলে ঘোষণা করেন। ছেলের মৃত্যুশোক সামলে সংগ্রামের পরিবার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় মৃতদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গদানের। ওই রাতেই স্বাস্থ্য দপ্তরের ব্রেন ডেথ অডিট কমিটির উপস্থিতিতে রিজিওনাল অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশনের সদস্যরা সংগ্রামের দেহ পরীক্ষা করেন, শুরু হয় প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। সংগ্রামের সহকর্মী হালিশহরের বাসিন্দা অগ্নিভ ব্যানার্জী জানিয়েছেন, "সংগ্রামের একটি কিডনি পাচ্ছেন লিলুয়ার এক যুবক, দুটি কর্নিয়া যাচ্ছে বারাকপুরের একটি চক্ষু হাসপাতালে, লিভার পাচ্ছেন আগরতলার বাসিন্দা ৫৯ বছরের এক ব্যক্তি, আবার হাওড়ার এক বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি ১৭ বছরের এক কিশোরীর শরীরে সংগ্রামের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হবে এবং অপর এক কিডনি ও ত্বক এসএসকেএম হাসপাতালে দান করা হয়েছে।" আরও জানা গেছে, অঙ্গ নিয়ে যাওয়ার জন্য এদিন তৈরি হয় দুটি পৃথক গ্রিন করিডর। একটি হাওড়ার হাসপাতাল অন্যটি এস এস কে এমে। করোনা আবহে এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন রাজ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থায় নজির রাখবে সন্দেহ নেই। প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে সংগ্রামের বিয়ে হয়,একটি সন্তানও রয়েছে তাঁর। জীবদ্দশায় অঙ্গদানের বিষয়ে আগ্রহী ছিল সংগ্রাম, ব্রেনডেথের কথা শুনে তাই তাঁর স্ত্রী'ও আপত্তি করেননি স্বামীর বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তে। এখন তাদের সব থেকে বড় সান্তনা সংগ্রাম তো বেঁচেই আছে সকলের মধ্যে!
No comments