মিনাখাঁর মোহনপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন : চরম অসহায় খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী দুর্গতরা
সাতদিনের সমাচার : কোথাও এক ফোঁটা জলের জন্য মানুষের হাহাকার, আবার কোথাও বা জলে ডুবে থেকে জল থেকে বাঁচার জন্য হাহাকার! উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ মোহনপুর অঞ্চলের কালিবাড়ি, চন্ডিবাড়ি, সহ একাধিক গ্রামের মানুষ জল থেকে বাঁচার জন্য হাহাকার করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ২০মে আম্ফানের দাপটে মিনাখাঁর চন্ডিবাড়ি গ্রামে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রশাসন এলাকাবাসীদের যৌথ উদ্যোগে প্রায় তিন বারের চেষ্টায় বাঁধ মেরামত হয়েছিল ঠিকই। সে সময় মাসখানেক ওই এলাকার মানুষজন জল'কে সঙ্গী করে জলের মধ্যেই বসবাস করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দেও ফিরছিলেন তারা। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে অমাবস্যার ভরা কোটালের জেরে নদীতে জলস্ফীতি দেখা যায়, মেরামতের স্থানগুলো ভেঙে ফের প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা!
জল যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা মোহনপুরবাসীর। গত কয়েক মাস ধরে জলজ প্রাণীর মতো বসবাস করে জল শুকোতে না শুকোতেই আবারও জলমগ্ন গোটা এলাকা। প্রচুর কাঁচাবাড়ি ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে, ওই সমস্ত গৃহহীনরা রাস্তার উপর অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে করে দিন কাটাচ্ছেন। সন্ধ্যে হলেই বাড়ছে সাপের উপদ্রব।
জল আর বিষধর সাপ'কে সঙ্গী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে এলাকার শতাধিক পরিবার। খোলা আকাশের নিচেই চলছে রান্না-খাওয়ার কাজ। কিন্তু এইভাবে কতদিন ! উত্তরও অজানা তাদের। কবেই বা নদী বাঁধ মেরামতের কাজ সমাপ্ত হবে, আর কতদিনই বা মেরামত স্থায়ী হবে, তাও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না প্রশাসন। বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে বিদ্যুৎহীন এলাকায় রাস্তার উপর অস্থায়ী তাঁবুকে করোনা আবহকে সঙ্গে করেই দিন কাটাচ্ছে তারা। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেয় না, কেমন আছে তারা, কি অবস্থায় আছে তারা তাও জানতে আসেনা, প্রশাসনের উদ্যোগে নেই কোনও সাহায্য! চরম সংকটের মধ্যে কাটছে দিন। তবে এলাকাবাসীদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোহনপুর অঞ্চলের প্রধান নিরুপমা মিস্ত্রিদাস ! তাঁর দাবি,"দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে তো ! এর বেশি এখনই কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না l"
No comments