সিবিআই হানা নিয়ে উত্তাল হালিশহর ---------------------------- সময় এবং মানুষ যোগ্য জবাব দেয় : সুবোধ
সোনালী ব্যানার্জী, হালিশহর : কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে পুরপ্রধান রাজু সাহানি'র গ্রেপ্তার এবং পরবর্তী পর্যায়ে রাজু ঘনিষ্ঠ বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়ি এবং সদর দপ্তর মঙ্গলদ্বীপ ভবনে হানা-তল্লাশি নিয়ে এই মুহূর্তে শিরোনামে হালিশহর। শুক্রবার ২ সেপ্টেম্বর হালিশহর পুরপ্রধান রাজু সাহানির বাড়িতে হানা দিয়ে তদন্তকারীদের দাবি, নগদ ৭৫ লক্ষ টাকা আর একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র তারা উদ্ধার করেছেন। অথচ যে বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে রাজু'র যোগসাজেশ থাকার অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেখানে ৭৫ লক্ষের বদলে উচিত ছিল অন্তত পক্ষে ২০ বা ৩০ কোটি টাকা উদ্ধার!
বস্তুত, অভিজাত এবং প্রকৃত ধনি পরিবারের সন্তান পেশায় ব্যবসায়ী রাজু সাহানি, সুবোধ কিংবা কমল অধিকারীদের জন্ম কিন্তু 'সোনার চামচ' মুখে নিয়ে ! অন্যান্যদের মত রাজনীতিতে এসে তারা কামাইবাজি করেছেন, এটা শুনলে হালিশহরের বাচ্চারাও হাসবে! রাজুর পিতা লক্ষ্মণ সাহানি এতদ অঞ্চলের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং পুরপ্রতিনিধি হিসেবে সমাজসেবার কাজে যুক্ত থাকলেও রাজু সাহানি নিজের পিতৃ পরিচয় ভাঙিয়ে চলেননি কখনোই। হালিশহর পুরসভার হাল ধরেই তিনি নিজের জাত চিনিয়েছিলেন ! পুর-পরিষেবা এবং পুর-পরিকাঠামো আমূল বদলে দেয়া মানুষটি পুর-নাগরিকদের খুব কাছের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন অল্পদিনেই, বালি খাদান বন্ধ থেকে বেআইনি পুকুর ভরাট নিয়ে রাজুর তৎপরতা দিন কে দিন অনেকের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল সন্দেহ নেই ! খোদ পুরপ্রধানের এ হেন তৎপরতা এবং জনসংযোগ অনেকের কাছেই ছিল হিংসের কারণ, বহুবার তাকে চক্রান্ত করে বদনাম করার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু রাজু বার বার নিজেকে প্রমান করেছেন কাজের মধ্যে দিয়ে। এখন হঠাৎ করে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে তাকে জড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে গ্রেপ্তার অনেকের মতেই "তৈরী করা গল্প" ! তবে বিষয়টি বিচারাধীন, এবং আদালতের উপর রাজুর পরিবার এবং হালিশহরের মানুষের পূর্ণ আস্থা রয়েছে l অন্যদিকে ৪ সেপ্টেম্বর সকাল সকাল বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাসস্থান,সদর দপ্তর, তার সহোদর কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারী এবং অন্যান্য ভাইদের বাসস্থানে হানা দিয়ে দীর্ঘসময় তল্লাশি চালিয়েও কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। তাদের সঙ্গে রাজু যেমন পূর্ণ সহযোগিতা করেছিলেন, তেমনই সুবোধ ও কমল অধিকারীও সিবিআই এর সাথে সহযোগিতা করে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেছেন এদিন। তবে বহু চেষ্টা চরিত্রের পরও উল্লেখযোগ্য সাফল্য না পাওয়া এবং সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সিবিআই এর নীরব প্রস্থান এটাই প্রমান করে রাজু সাহানি এবং সুবোধ অধিকারী'দের স্বচ্ছ ইমেজে সহজে কালি মাখানো যাবে না । বাকিটা তো সময় সাক্ষী থাকছেই।
No comments